বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বৃহস্পতিবার ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৫১ রানে জিতেছে বাংলাদেশ।
৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪১ ওভার শেষে বিসিবি একাদশের স্কোর ছিল ৩১৪/৬। আলোকস্বল্পতায় এরপর আর খেলা সম্ভব না হওয়ায় ফল নির্ধারিত হয় ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও রুবেল হোসেনের প্রথম স্পেল সাবধানী ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে দেন কাইরন পাওয়েল ও হোপ। উইকেটে বোলারদের জন্য কিছুই ছিল না। তবে ভালো লাইন-লেংথে বোলিং করে দুই পেসার পরীক্ষা নেন ওপেনারদের।
মাশরাফি-রুবেল আক্রমণ থেকে সরার পর দুই তরুণ পেসার মেহেদী হাসান রানা ও শাহিন আলমের ওপর চড়াও হন হোপ। টেস্ট সিরিজে ব্যর্থ এই ব্যাটসম্যানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ১৫ ওভারে একশ ছোঁয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর।
বিসিবি একাদশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু ভাঙেন সফরকারীদের ১০১ রানের জুটি। নিজের দ্বিতীয় বলে ফিরিয়ে দেন ৪৯ বলে ৪৩ রান করা পাওয়েলকে।
লম্বা সময় পর দলে ফেরা ড্যারেন ব্রাভো হাতছাড়া করেছেন বড় ইনিংস খেলার সুযোগ। রানার বলে কট বিহাইন্ড হয়ে শেষ হয় বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ২৪ রানের ইনিংস।
ওয়ানডে সিরিজে ঝড় তোলা শিমরন হেটমায়ার শট খেলতে শুরু করেছিলেন। তবে তাকে বেশি দূর যেতে দেননি রুবেল। তাকে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় মিডউইকেটে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন ছন্দে থাকা বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ২৭ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে হেটমায়ার করেন ৩৩।
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে অভিজ্ঞ মারলন স্যামুয়েলসকে ফেরান মাশরাফি। ৮৪ বলে ৬ চার ও তিন ছক্কায় ৮১ রান করা হোপকে থামান বাঁহাতি স্পিনার অপু।
বিনা উইকেটে ১০১ থেকে ১৭৬ পর্যন্ত যেতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৩১ পর্যন্ত যায় চেইস ও ফ্যাবিয়ান অ্যালেনের ব্যাটে।
৩২ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৪৮ রান করা অ্যালেনকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান রুবেল। টেস্ট সিরিজে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ চেইস ৫১ বলে ৬ চার ও ১ চারে অপরাজিত থাকেন ৬৫ রানে।
রুবেল, নাজমুল ও রানা নেন দুটি করে উইকেট।
বড় রান তাড়ায় বিসিবি একাদশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ও ইমরুল কায়েস। ৯ ওভারে গড়েন ৮১ রানের জুটি। একটু ঝুঁকি নিয়ে খেলা ইমরুল ফিরেন থিতু হয়ে। অফস্পিসার চেইসকে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় বাঁহাতি এই ওপেনারের ৫ চারে গড়া ২৭ রানের ইনিংস।
শতরানের জুটিতে দলকে সহজ জয়ের ভিত গড়ে দেন তামিম ও সৌম্য। উইকেটের চারপাশে শট খেলে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এলোমেলো করে দেন সফরকারীদের। বল কোথায় ফেলবেন যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না কিমো পল, দেবেন্দ্র বিশুরা।
৭০ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়া তামিমকে ফিরিয়ে ১১৪ রানের জুটি ভাঙেন চেইস। ৭৩ বলে ১৩ চার ও চার ছক্কায় ১০৭ রান করেন লম্বা সময় পর খেলতে নামা দেশসেরা ওপেনার।
লেগ স্পিনার বিশুর বলে উইকেট ছুড়ে আসেন মোহাম্মদ মিঠুন ও আরিফুল হক। সফরে এ নিয়ে চারবার মিঠুনকে আউট করলেন বিশু। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয় ও শামিম পাটোয়ারি টিকেননি বেশিক্ষণ।
অধিনায়ক মাশরাফিকে নিয়ে বাকিটা শেষ করেন সৌম্য। বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান অপরাজিত ছিলেন ১০৩ রানে। ৮৩ বলে খেলা তার ঝড়ো ইনিংসটি গড়া ৭টি চার ও ৬টি ছক্কায়। মাশরাফি ১৮ বলে অপরাজিত থাকেন ২২ রানে।
আগমী রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩৩১/৮ (কাইরন পাওয়েল ৪৩, হোপ ৮১, ব্রাভো ২৪, স্যামুয়েলস ৫, হেটমায়ার ৩৩, রভম্যান পাওয়েল ০, চেইস ৬৫*, অ্যালেন ৪৮, পল ২, আমব্রিস ১০*; রুবেল ২/৫৫, মাশরাফি ১/৩৭, রানা ২/৬৫, শাহিন ০/১৮, সৌম্য ০/৭২, নাজমুল ২/৬১, শামিম ১/১৬)
বিসিবি একাদশ: ৪১ ওভারে ৩১৪/৬ (তামিম ১০৭, ইমরুল ২৭, সৌম্য ১০৩*, মিঠুন ৫, আরিফুল ২১, তৌহিদ ০, শামিম ৯, মাশরাফি ২২*; রোচ ০/৪৯, টমাস ১/৫৭, চেইস ২/৫৭, পল ০/৪২, বিশু ২/৮১, অ্যালেন ১/১৯)
ফল: বিসিবি একাদশ ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৫১ রানে জয়ী
RF. bdnews24